কলকাতা সংবাদদাতা:আগস্ট মাসের ২ এবং ৯ তারিখে বাংলায় কোনও লকডাউন হচ্ছে না। যদিও মঙ্গলবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আগের মতোই লকডাউন চলবে। কিন্তু তারই মধ্যে ১০ দিন হবে সম্পূর্ণ লকডাউন। উল্লেখ্য, এখন লকডাউন চললেও আনলক পর্যায়ে রাজ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্র খোলা রয়েছে। বিধিনিষেধ মেনে সেই ক্ষেত্রগুলিতে সমস্ত কাজকর্ম চলছে।
কিন্তু পরে মুখ্যমন্ত্রী ফের সাংবাদিকদের জানান, আগস্ট মাসে ১০ দিন নয়, সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে ৯ দিন। এর পর রাতে স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করে জানায়, বিশেষ কিছু মহলের অনুরোধে আগামী ২ এবং ৯ আগস্ট লকডাউন হচ্ছে না। ফলে আগস্ট মাসে সম্পূর্ণ লকডাউনের সংখ্যা কমে হল ৭ দিন। সূত্রের খবর, বিশেষ কিছু ধর্মীয় সংগঠনের অনুরোধে রাজ্য সরকার ওই দুইদিন লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে রাজ্যের এই সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিখ্যাত ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ। তাই এখন সপ্তাহে ২ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন করেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’
শুধু তাই নয়, তিনি ভয়ঙ্কর একটি মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ‘এপ্রিল মাসের শুরুর দিকেই রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। সংক্রমণ মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তবে এই ঘটনার জন্য সরকারি সংস্থাগুলির ব্যর্থতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকেও দায়ী করেছেন তিনি। অবশ্য তাঁর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনাহীন পদক্ষেপের জন্যই দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার সতর্ক রয়েছে বলেই সারা দেশের তুলনায় বাংলায় সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি।’
অন্যদিকে, এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে ভাবে তিনি একজন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ জানিয়েছেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এই আচরণ অপ্রত্যাশিত। কেন না, এমন অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী কখনও তাঁর কাছে করেননি। তিনি পরিষ্কার লিখেছেন, ‘এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ পাশাপাশি তিনি এই আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ নাকি একটি পুরুষ শাসিত রাজ্যে পরিণত হতে চলেছে। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এদিন রাত পর্যন্ত সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়নি।